বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং করবেন যে ভাবে
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করছেন। তাহলে নিচের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন । কেননা এ আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করেছি অনলাইনে ট্রেন টিকেট বুকিং, অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট বুকিং ও ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আশাকরি, আর্টিকেলটি পরলে বিস্তারিত ভাবে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং সম্পর্কে জানতে পারবেন।
অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং মানে হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট ক্রয় বা সংগ্রহ করা। অনলাইনে টিকেট ক্রয়ের জন্য আপনাকে রেলওয়ে কাউন্টার গিয়ে টিকেট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না।আপনি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে খুব সহজেই ঘরে বসে থেকে টিকেট বুক করতে পারেন।
পোস্ট সূচিপত্র.
অনলাইনে ট্রেন টিকেট বুকিং
বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে আমাদের জীবনযাত্রা মান এতই সহজ হয়ে গেছে যে এখন ট্রেন, বাস, লঞ্চ এবং বিমানের টিকেট ঘরে বসে থেকেই কাটা যাচ্ছে। টিকেট কাটার জন্য কাউন্টার জন্য যেতে হয় না।আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটার ঝামেলা বর্তমান নেই। শুধুমাত্র একটি স্মার্ট ফোন,ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকলেই আপনি বসেই টিকেট ক্রয় করে ফেলতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী টু ঢাকা রুটে ট্রেনের নতুন ভাড়া
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য ‘রেলসেবা’ নামে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি অ্যাপ রয়েছে। এখান থেকে আপনি চাইলে অনলাইনে সহজেই ট্রেনের টিকেট ক্রয় করতে পারবেন। আবার বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ট্রেনের টিকেট ক্রয় করতে পারবেন এবং আরেকটি অপশন হচ্ছে বিকাশ থেকে ট্রেনের টিকেট ক্রয় করতে পারবেন।।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার জন্য eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনার ফোন নম্বর, NID কার্ড, জন্ম নিবন্ধনের তারিখ ও ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন। তারপর আপনি কোন স্টেশন থেকে কোন স্টেশনে যাবেন ও আপনার গন্তব্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখের ট্রেন সার্চ করুন। সব শেষে আসন বাছাই করে অনলাইনে পেমেন্ট করে টিকিট বুকিং কনফার্ম করুন।
আরো পড়ুনঃ বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের অনলাইন টিকিট কাটার নিয়ম
বাংলাদেশ রেলওয়েতে টিকেট বুকিং করার বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হল-
NID কার্ড ভেরিফিকেশন
- আপনার স্মার্ট ফোন,ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থেকে গুগল ক্রোম (Chrome) ব্রাউজার থেকে ভিজিট করুন এই ওয়েবসাইটে- Bangladesh Railway E-Ticketing Service অথবা আপনি প্লে-স্টোর থেকে " Rail Sheba " অ্যাপ ডাউনলোড করুন ।
- প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে আপনার NID নাম্বর ও জন্ম নিবন্ধনের তারিখ দিয়ে NID কার্ড ভেরিফিকেশন করতে হবে।ভেরিফিকেশন করার জন্য Register বাটনে ক্লিক করুন।
- আপনার মোবাইল নাম্বর, NID নাম্বর ও জন্ম নিবন্ধনের তারিখ দিয়ে Verify অপসনে ক্লিক করুন। আপনার আইডি ভেরিফিকেশন হলে, একটি Password সেট করুন।
- তারপর আপনার ই-মেইল, পোস্ট কোড ও ঠিকানা ইংরেজিতে লিখে Registration বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এখনো হাতে না পেলে, অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারেন। সব তথ্য অবশ্যই ইংরেজিতে লিখবেন। এখন ওয়েবসাইটের বাংলা ভার্সন প্রস্তুত হয়নি।
মোবাইল নাম্বর ভেরিফিকেশন
- মোবাইল নাম্বর ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার মোবাইল ফোনে 6 ডিজিটর একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে এবং কোডটি দিয়ে Verify করতে হবে। এর জন্য আপনার মোবাইলে আসা কোডটি 45 সেকেন্ডের মধ্যে সঠিক ভাবে লিখে Continue বাটনে ক্লিক করুন।
- আপনার অ্যাকাউন্টটি সম্পূর্ণ ভাবে চালু হয়ে যাবে এবং স্বয়ংক্রিয় ভাবে অ্যাকাউন্ট Log In হবে। লগইন হওয়ার পর Disclaimer এর শর্ত মেনে I AGREE করুন।
ট্রেন সময়সূচী দেখুন
- আপনা প্রোফাইল আপডেট করার পর, ওয়েব সাইটের Home পেইজে ফিরে যান।তারপর আপনি কোন স্টেশন থেকে যাবেন ও কোন স্টেশনে যেয়ে নামবেন সেই অনুযায়ী ট্রেনের সময়সূচী দেখুন।
- সময়সূচী দেখার জন্য From এ লিখবেন আপনি যে স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠবেন এবং To তে আপনি কোন স্টেশনে নামবেন তা লিখবেন ও Date of Journey থেকে আপনার ভ্রমণের তারিখ লিখুন।
- Choose Class অপসন থেকে উপরের মত অপশন গুলো পূরণ করে সবুজ রংয়ের Search Trains বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার বাছাই করা তারিখের সকল ট্রেন গুলো আপনাকে দেখানো হবে। এখান থেকে ট্রেন ছাড়ার সময় অনুযায়ী আপনার পছন্দ মত ট্রেন থেকে টিকেট কাটার জন্য সিলেক্ট করুন।
ট্রেন ও সিট বাছাই করুন
- আপনার যাত্রার সময় ও আসনের ধরণ অনুযায়ী পছন্দ মত ট্রেন ও সিট বাছাই করুন। এ জন্য আপনার পছন্দের ট্রেনের আসন খালি থাকা অনুযায়ী (Seats Available থাকলে) View Seats বাটনে ক্লিক করে সিট বুকিং করুন। এরপর CONTINUE PURCHASE বাটনে ক্লিক করে পরের ধাপে যান।
যাত্রীর তথ্য দিন
- যত গুলো সিট বুক করেছেন সে অনুযায়ী যাত্রীর তথ্য দিতে হবে। যেমন, যাত্রীদের নাম এবং শিশু না বয়স্ক তা সিলেক্ট করতে হবে। ৩ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশু থাকলে Passanger Type Child সিলেক্ট করুন। Child সিলেক্ট করলে তার ভাড়া স্বয়ংক্রীয় ভাবে সমন্বয় হবে বা কমে যাবে।শিশুদের টিকেটের মূল্য কিছুটা কম হয়।
টিকিটের মূল্য পরিশোধ
- টিকেটের মূল্য পরিশোধ করার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং (bKash) অথবা Debit/Credit Card অপশন বেছে নিতে হবে। কিন্তু মোট ভাড়ার পরিমাণ, ভ্যাট, ব্যাংক চার্জ ও মোট খরচ কত টাকা আপনাকে দেখানো হবে। এরপর Confirm Purchase বাটনে ক্লিক করে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন।
ট্রেনের টিকিট ডাউনলোড ও প্রিন্ট
- সফল ভাবে পেমেন্ট করার সাথে সাথেই Bangladesh Railway E Train Ticket System থেকে ই-টিকিট ইস্যু করা হবে। টিকিটটি স্বয়ংক্রীয় ভাবে আপনার ব্রাউজার থেকে ডাউনলোড করা হয়ে যাবে। আপনার প্রোফাইলের Purchase History থেকেও টিকিট ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
- তাছাড়া, টিকিটের একটি কপি আপনার ই-মেইলে পাঠানো হবে। ই-মেইলের Inbox Folder এ না পাওয়া গেলে SPAM Folder চেক করতে পারেন।তারপর টিকিটটি A4 সাইজের সাদা কাগজে প্রিন্ট করে নিন।
অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট বুকিং
ট্রেনের টিকেট বুকিংয়ের জন্য অ্যাপ ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং সুবিধা জনক। বর্তমান সময়ে‘Rail Sheba’ অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট বুকিংকরার নিয়ম নিচে দেওয়া হল-
- প্রথমে আপনার স্মার্ট ফোনের গুগল প্লে-স্টোর থেকে ‘Rail Sheba’ লিখে সার্চ দিয়ে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিন।
- অ্যাপটি ডাউনলোড হয়ে গেলে ‘Sign Up’ এ ক্লিক করে আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আপনার নাম, ইমেইল, মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে তথ্য প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশনের পর ইমেইলে ভ্যারিফিকেশন লিঙ্ক পাঠাবে। এই লিঙ্কে ক্লিক করলেই অ্যাকাউন্ট সচল হয়ে যাবে।
- অ্যাকাউন্ট সচল হবার পর অ্যাকাউন্টে গিয়ে প্রোফাইল সম্পূর্ণ করতে হবে। সে জন্য আপনার জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার বা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে প্রোফাইল সম্পূর্ণ করতে হবে।
- এ ভাবে অ্যাকাউন্ট তৈরি হওয়ার পর ‘Rail Sheba’ অ্যাপে লগ ইন করে ট্রেনের টিকেট কাটা, ট্রেনের সময়সূচী জানা, প্রয়োজনে ট্রেনের বগিও দেখে নেওয়া যাবে।
- ট্রেনের টিকেট বুক করার জন্য আপনার যাত্রার তথ্য প্রদান করতে হবে যেমন ‘Purchase’ এ ক্লিক করে যাত্রা শুরু ও শেষের স্টেশন, তারিখ, যাত্রী সংখ্যা এবং আসনের শ্রেণী (শোভন, শো: চেয়ার, এসি, স্নিগ্ধা) নির্বাচন করতে হবে।
- তারপর আপনাকে তারিখ নির্বাচন করতে হবে। এরপরেই কোন কোন ট্রেন আছে, সময় কখন সে সব বিস্তারিত তথ্য আসবে। এমনকি পছন্দসই সিটও আপনি নির্বাচন করে নিতে পারবেন।
- একজন সর্বোচ্চ ৪ টি টিকেট কাটতে পারবে। সে জন্য এর বেশি সিট নির্বাচন করা যাবে না। এবং একটি অ্যাকাউন্ট দিয়ে এক সপ্তাহে ২ বারের বেশি টিকেট ক্রয় করা যাবে না।
- সিট নির্বাচন করার পর ‘Continue’ বাটনে এ ক্লিক করলে ভাড়ার টাকা সহ সকল তথ্য চলে আসবে। ভাড়ার সাথে ব্যাংক চার্জ এবং ভ্যাট যুক্ত হয়ে পুরো টাকার পরিমাণ আপনাকে দেখাবে।
- তারপর ‘pay now’বাটনে এ ক্লিক করলে ডিজিটাল পেমেন্টের সুযোগ দিবে। এখানে বিকাশ, রকেট, ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, নেক্সাস কার্ড দিয়ে ভাড়া পরিশোধের সুযোগ আছে।
- আপনার পছন্দমত সঠিক মাধ্যম নির্বাচন করে অ্যাকাউন্ট নাম্বার ও পিন নাম্বার দেয়ার পর একটি কোড আসবে ফোনে। এই কোড দিলেই টিকেট ক্রয় করা হয়ে গেলো।
আরো পড়ুনঃ বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের নতুন ভাড়ার তালিকা-সময়সূচী
টিকেট ক্রয় করা হয়ে গেলে অ্যাকাউন্ট থেকে ভাড়ার নিদিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে নিবে এবং কিছুক্ষনের মধ্যে ই-মেইল করে টিকে ট পাঠিয়ে দিবে। আবার অ্যাপে গিয়ে ‘History’ তে ক্লিক করলেও টিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন।
ই-ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট বুকিং
- বাংলাদেশ রেলওয়ের ই- ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ট্রেনের টিকেট কেনা যাবে। এর জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-ওয়েবসাইট eticket.railway.gov.bd এ প্রবেশ করতে হবে।
- ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর নাম, ইমেইল এড্রেস, মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশনের করার পর জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার দিয়ে প্রোফাইল সম্পূর্ণ করতে হবে।এভাবে রেজিস্ট্রেশন করে অ্যাকাউন্ট চালু হয়ে যাবার পর ট্রেনের টিকেট কেনা যাবে।
- টিকেট কেনার জন্যে উপরের ওয়েবসাইটে গিয়ে যাত্রার স্থান এবং যাত্রা শুরুর স্থান নির্বাচন করতে হবে।
- তারিখ, আসনের ধরণ টিকেটের সংখ্যা নির্বাচন করলে এই তারিখে সচল সকল ট্রেনের তালিকা এবং সময়সূচি আসবে।
- ট্রেন নির্বাচন করার জন্য ‘Details’ এ ক্লিক করে ‘Availability’ নির্বাচন করলে এখনো অবিক্রীত টিকেটের সংখ্যা এবং ভাড়া দেখা যাবে।
- ‘Purchase’ এ ক্লিক করলে লগইন এর অপশন দেখাবে। লগইন করলে অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে ভাড়া দেয়ার পরে ইমেইল ঠিকানায় টিকেট পাঠিয়ে দেয়া হবে।
যাত্রার সময় এই টিকেট প্রিন্ট করে নিতে পারো অথবা স্টেশনের টিকেট কাউন্টারে এই ই-টিকেট দেখালে প্রিন্ট করা কাউন্টার টিকেট দিবে।
বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট বুকিং
সরাসরি বিকাশ অ্যাপ থেকে টিকিট কাটার নিয়ম এখনো আপডেট হয়নি। তবে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকিটিং সাইট থেকে বিকাশে পেমেন্ট করে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ ট্রেন ভ্রমণ বাংলাদেশ থেকে ভারত
আশা করি খুব শিগ্রই বিকাশ থেকে টিকিট বুকিং করতে পারবেন। তবে এটি সরাসরি ওয়েবসাইট থেকে কাটার মত একই হবে। ওয়েবসাইট থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার পদ্ধতিটি দেখুন- ওয়েবসাইট থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম-
- ট্রেনের টিকেট বিকাশ অ্যাপ দিয়ে রেলওয়ের ‘ই-টিকেটিং কিনতে পারবেন।
- টিকিট কিনতে বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করে অ্যাপের টিকেট রেলসেবা অ্যাপ থেকে ট্রেন নির্বাচন করতে হবে।
- এখানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘ই-টিকেটিং সার্ভিস’ স্ক্রিন আসবে।
- এখানে যাত্রার শুরুর স্থান, গন্তব্য, তারিখ, টিকেটের সংখ্যা এসব তথ্য দিয়ে ট্রেন নির্বাচন করতে হবে।
- গ্রাহকের প্রয়োজনীয় টিকেট থাকলে ‘purchase’ এ যেতে হবে। রেলওয়ের ওয়েবসাইট বা অ্যাপের নিবন্ধিত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে।এরপর বিকাশ দিয়ে ভাড়া দেয়ার গেটওয়ে আসবে।
- গেটওয়েতে বিকাশ নাম্বর দিলে ফোনে একটি ভ্যারিফিকেশন কোড আসবে।
- এই কোড ও পিন নাম্বার দিয়ে টিকেট নিশ্চিত করলে ই-মেইল করে টিকেট পাঠিয়ে দেয়া হবে। তবে এ ক্ষেত্রে রেলওয়ের ই-টিকেটিংয়ে অ্যাকাউন্ট করে রাখতে হবে।
মোবাইলে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
মোবাইলে ট্রেনের টিকেট কাটতে আপনার মোবাইলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে Rail Sheba অ্যাপটি ডাউনলোড করুন অথবা আপনার মোবাইলের Google Chrome থেকে ভিজিট করুন এই লিংকে railapp.railway.gov.bd ।
অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটার সময়
অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট যে কোন সময় কাটা যায়।সাধারণ ভাবে বলতে রাত দিন ২৪ ঘণ্টা। আপনি আজ থেকে আগামী ১০ দিন পর্যন্ত অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ক্রয় করতে পারবেন।বাংলাদেশে রেলওয়েকে সবচেয়ে নিরাপদ, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী পরিবহন হিসাবে ধরা হয়। তাই দূরপাল্লার যে কোনো ভ্রমণে জন্য সবাই ট্রেন ব্যবহারেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
কিন্তু ট্রেনের টিকিট পাওয়া অনেকটাই কষ্টকর বা দুঃসাধ্য।অনেক সময় অনেক লম্বা লাইনে দাড়িয়েও শেষ পর্যন্ত আপনি হয়তো টিকিট পাবেন না। তাই আপনি ঘরে বসেই খুব সহজেই আপনার স্মার্ট ফোনের থেকেই বাংলাদেশ রেলওয়েতে অনলাইনে টিকেট বুকিং করতে পারবেন।
কিভাবে ট্রেনের টিকিট চেক করবেন
আপনার নিজেশ্ব প্রোফাইল থেকে টিকিট ক্রয় করলে সেটা অবশ্য আর চেক করার আর দরকার হবে না। তবে আপনি যদি অন্য দ্বারা অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করেন তাহলে, ভ্রমণের আগে অবশ্যইটিকিট চেক করে নিবেন। ট্রেনের টিকিট চেক করার জন্য ই-টিকিটিং সাইটে রেজিস্ট্রেশনের কোন প্রয়োজন নেই।আপনি সরাসরি ভিজিট করেই চেক করতে পারবেন।
- অনলাইনে ট্রেনের টিকিট চেক করার জন্য eticket.railway.gov.bd ভিজিট করুন।
- এরপর, উপরের ডান পাশ থেকে Verify Ticket মেন্যু বারে ক্লিক করুন।
- তারপর ট্রেনের টিকেট কাটার সময় যে মোবাইল নাম্বর ব্যবহার করেছেন সে নাম্বর এবং আপনার টিকেটে উপরের অংশে লেখা, PNR Number টি লিখুন।
- তারপর Verify Ticket বাটনে ক্লিক করবেন যদি টিকিট সঠিক থাকে তাহলে আপনার টিকিট , Ticket Verified দেখাবে এবং ভ্রমণের রুট আপনাকে দেখাবে।
ট্রেনের টিকিট মূল্য
- ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের টিকিট শোভন 450 টাকা, স্নিগ্ধা ভ্যাটসহ 777 থেকে 855 টাকা, এসি এস ভ্যাটসহ 1025 টাকা এসি বিজনেস ভ্যাটসহ 1398 টাকা।
- ঢাকা থেকে কক্সবাজার ট্রেনের টিকিট শোভন 695 টাকা, স্নিগ্ধা ভ্যাটসহ 1325 টাকা, এসি এস ভ্যাটসহ 1590 টাকা ।
- ঢাকা থেকে রাজশাহী ট্রেনের টিকিট শোভন 405 থেকে 450 টাকা, স্নিগ্ধা ভ্যাটসহ 772 থেকে 851 টাকা, এসি ভ্যাটসহ 926 থেকে 1024 টাক।
- ঢাকা থেকে সিলেট ট্রেনের টিকিট শোভন 375 টাকা, স্নিগ্ধা ভ্যাটসহ 719 টাকা, এসি এস ভ্যাটসহ 863 এসি বিজনেস ভ্যাটসহ 1288 টাকা ।
- ঢাকা থেকে খুলনা ট্রেনের টিকিট শোভন 625 থেকে 630 টাকা, স্নিগ্ধা ভ্যাটসহ 1196 থেকে 1208 টাকা, এসি এস ভ্যাটসহ 1432 এসি বিজনেস ভ্যাটসহ 2168 টাক।
তবে যে কোন সময় বাংলাদেশ রেলওয়ে কতৃপক্ষ ট্রেনের টিকিটের দাম কমবেশি করতে পারে
ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়ার নিয়ম
আপনারা যারা অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করেছেন তারা মূলত অনলাইনের মাধ্যমেই টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা রিফান্ড নিতে পারবেন। এর জন্য Rail Sheba অ্যাপ বা E Ticket ওয়েবসাইটে লগইন করুন। আপনার প্রোফাইল থেকে Purchase History অপশন থেকে টিকিট রিফান্ড করুন। এ ছাড়া কাউন্টারে কেনা টিকেট কাউন্টারেই ফেরত দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ঢাকা থেকে কক্সবাজার ট্রেন ভ্রমন - ভাড়া ও সময়সূচী সম্পর্কে পড়ুন
মূলত অনেকেই ট্রেনের টিকিট 4/5 দিন আগে কিনে রাখুলতকিন্তু কোন অনাকাঙ্খিত সমস্যার কারণে ভ্রমণ বাতিল হতেই পারে।এর জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনের টিকিট ফেরত দেয়ার জন্য অবশ্যই আপনার স্টেশনের কাউন্টারে যেতে হবে। টিকিট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে নিম্মোক্ত চার্জ ধার্য করা হয়।
- ট্রেনের টিকিট কাটার পর 48 ঘন্টা হওয়ার আগে টিকিট ফেরত দেওয়ার জন্য এসি শ্রেণীর ক্লাসের জন্য 40 টাকা, প্রথম শ্রেণীর ক্লাসের জন্য 30 টাকা এবং অন্য শ্রেণীর ক্লাসের জন্য 25 টাকা পরিষেবা চার্জ সহ কাটা হবে।
- ট্রেনের টিকিট কাটার পর 48 ঘন্টার কম এবং 24 ঘন্টার বেশি হলে, ভাড়ার 25% টাকা কাটা হবে।
- ট্রেনের টিকিট কাটার পর24 ঘন্টার কম এবং 12 ঘন্টার বেশি হলে, ভাড়ার 50% টাকা কাটা হবে।
- ট্রেনের টিকিট কাটার পর 12 ঘন্টার কম এবং 06 ঘন্টার বেশি ভাড়ার 75% টাকা কাটা হবে।
- ট্রেনের টিকিট কাটার পর 06 ঘন্টার কম সময়ের জন্য কোন টাকা ফেরত দেওয়া হয় না।
- অনলাইন টিকিট ক্রয়ের জন্য সার্ভিস চার্জ সমূহ অ-ফেরতযোগ্য
ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস
বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস হচ্ছে Rail Sheba। তবে, অ্যাপ ছাড়াই মোবাইল থেকে Google Chrome ব্রাউজার থেকে railway.gov.bd এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকিট ওয়েবসাইট eticket.railway.gov.bd ভিজিট করে ট্রেনের টিকিট বুকিং করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, পূর্বে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বিক্রয় কার্যক্রম Computer Network System, Bangladesh এর কাছে ছিল। তাদের ডেভেলপ করা ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক ছিল।
ট্রেনের টিকিট কেনার শর্তাবলী
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট ক্রয়ের জন্য প্রযোজ্য কিছু শর্তাবলী রয়েছে (তথ্যসূত্র- বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সার্ভিস)
- (BD Train Ticket Online) রেলের টিকিট ইস্যু করার জন্য, বাংলাদেশ রেলওয়ে পোর্টাল কার্ড/ওয়ালেট চার্জ তথ্যের জন্য বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ের উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীদের কোনো সংবেদনশীল তথ্য যেমন কার্ড/ওয়ালেটের বিবরণ, ওটিপি, পিন কোড সংরক্ষণ করে না।
- যদি কোনো কার্ড/ওয়ালেট চার্জ করা হয় এবং/অথবা পেমেন্ট গেটওয়ে যথা সময়ে তথ্য ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এটা সম্ভব যে যাত্রীর কার্ড/ওয়ালেটে কাঙ্খিত টিকিটের জন্য ইস্যু করা ছাড়াই চার্জ করা হবে। এই ধরনের ক্ষেত্রে, পেমেন্ট গেটওয়ে স্বয়ংক্রিয় ভাবে 8 (আট) কার্য দিবসের মধ্যে গ্রাহক-যাত্রীর দ্বারা ক্রয়কৃত অর্থ তাদের নিজ নিজ কার্ড/ওয়ালেটে ফেরত দেবে।
- যাইহোক, যদি এই ধরনের একজন ক্লায়েন্ট-যাত্রী 8 (আট) কার্য দিবসের মধ্যে ফেরত না পান, তাহলে ক্লায়েন্ট-যাত্রীকে support@br.gov.bd এ সমস্যাটির বিশদ বিবরণ সহ একটি অভিযোগ ইমেল পাঠাতে অনুরোধ করা হচ্ছে । এই ধরনের একজন ক্লায়েন্ট-যাত্রীকে উত্তর 7 কার্য দিবসের মধ্যে পাঠানো হবে।
- অর্থ প্রদান পরিষেবা প্রদানকারীর উপর নির্ভরতার কারণে সমস্যাটি সমাধান করতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
- অসফল কেনাকাটা এবং কার্ড চার্জিং সংক্রান্ত সমস্যা গুলির ফেরতের জন্য, ক্লায়েন্ট-যাত্রীকে অবশ্যই পেমেন্ট পরিষেবা প্রদানকারীর সাথে যোগাযোগ করতে হবে যার মাধ্যমে তিনি লেনদেন করেছেন।
- সফল ভাবে কেনা টিকিট ফেরতের জন্য, ক্লায়েন্ট-যাত্রীকে অবশ্যই তাদের নিজনিজ স্টেশনে যেতে হবে (অর্থাৎ, প্রস্থান স্টেশন যেখান থেকে ক্লায়েন্ট-যাত্রী ভ্রমণ করবেন) এবং ফেরত কাউন্টারের সাথে যোগাযোগ করুন।
- বাংলাদেশ রেলওয়ে বা Shohoz-Synesis-Vincen JV টিকিট প্রদান না করা বা পেমেন্ট প্রক্রিয়াকরণে ত্রুটি বা অন্য কোনো কারণে যা বাংলাদেশ রেলওয়ে বা Shohoz-Synesis-Vincen JV-এর নিয়ন্ত্রণের বাইরের কারণে টিকিট না দেওয়া বা ফেরত বিলম্বের জন্য দায়ী থাকবে না।
- বাংলাদেশ রেলওয়ে কোনো গ্যারান্টি/ওয়ারেন্টি দেয় না যে অনেক পরিষেবা প্রদানকারীর উপর নির্ভরতার কারণে উপরোক্ত পরিষেবা গুলির যে কোনো একটি নিরবচ্ছিন্ন, সময় মত বা ত্রুটিমুক্ত হবে।
- এই টিকিট অ-হস্তান্তরযোগ্য এবং অ-বরাদ্দযোগ্য।
- 3 থেকে 12 বছর বয়সের শিশুদের জন্য টিকিট কেনা বাধ্যতামূলক৷
- যে সব যাত্রী লাগেজের ওজন সীমার মধ্যে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য কোনো অতিরিক্ত ফি নেই: AC- 56 KG, প্রথম শ্রেণি- 37.5 KG, শোভন চেয়ার/ শোভন - 28 কেজি, স্নিগ্ধা - 23 কেজি।
- অনিবার্য পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় যাত্রার সময় কোচ/সিট নম্বর পরিবর্তন হতে পারে।
- বাংলাদেশ রেলওয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সম্পদ। টিকিট না ক্রয় বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভ্রমণ করবেন না। ভ্রমণের সময় ট্রেনের টিকিট অবশ্যই কিনুন এবং অন্যদেরকে টিকিট ক্রয় করতে উৎসাহিত করুন।
- বৈধ টিকিট ছাড়া যে কোন ভ্রমণ করলে বিচারের মুখোমুখি হতে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভ্রমণের জন্য যাত্রীর একটি বৈধ টিকিট থাকতে হবে। কোনো মেয়াদোত্তীর্ণ টিকিট বা ভবিষ্যতে ভ্রমণের তারিখ থাকা টিকিট বৈধ বলে গন্য করা হবে না।
- ভ্রমণের তারিখ এবং সময়, গন্তব্য, আসন নাম্বর এবং কোচের বিবরণ সম্পর্কিত টিকিটের সঠিকতা পরীক্ষা করা গ্রাহক-যাত্রীর দায়িত্ব।পছন্দসই গন্তব্যের প্রাপ্যতা, আসন সংখ্যা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ভুল ভাবে কেনা টিকিট গুলি প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।
উপরের এই শর্তাবলীতে বাংলাদেশ রেলওয়ে বা Shohoz-Synesis-Vincen JV দ্বারা স্বীকার করা যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে বা Shohoz-Synesis-Vincen JV কেউই রেল টিকিট বা ভ্রমণের কারণে উদ্ভূত প্রকৃতির কোনো দায় স্বীকার করে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং-শেষ কথা
প্রিয় পাঠক,আজকের এই আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয় বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট কি ভাবে বুকিং করবেন সে সম্পর্কে।সাথে আরও আলোচনা করেছি ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস ও অনলাইনে টিকিট কাটার অ্যাপস সে সম্পর্ককবাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছি ।
আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই আপনি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি সাথেই থাকুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url