বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক
ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাচ্ছেন কিন্তু জামানত নেই? তাহলে বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক জানতে আমাদের আজকের আরটিকেলটি পড়ুন। কারণ আমাদের আরটিকেল এর মাধ্যমে জানতে পারবেন কোন প্রকার জামানত ছাড়াই আপনার প্রয়োজনে কি ভাবে ঋণ নিতে পারবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া জাক, বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
বাংলাদেশ সরকার বেকার ও অর্ধ বেকার যুবকের জন্য বিনা জামানতে ঋণ দেয়ার কর্মসূচি চালু করেছে। দেশের যে কোন নাগরিক জামানত বিহীন ঋণ নিতে পারবে। আমাদের দেশে বেশ কিছু ব্যাংক আছে যেখানে কোন প্রকার জামানত ছাড়াই ঋণ নেয়া যায়। যাদের টাকার প্রয়োজন কিন্তু ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া ঋণ দিচ্ছেনা, তাদের জন্য এই ব্যাংক গুলো হতে পারে লাইফ সেভার।
আরো পড়ুনঃ সহজ কিস্তিতে লোন বাংলাদেশ
বাংলাদেশে বেশ কিছু ব্যাংকে জামানত ছাড়াই ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা আছে। এসব ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই পোস্টে। তো চলুন জেনে নেওয়া জাক, বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
পোস্ট সূচিপত্র.
বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক
বাংলাদেশে সর্বপ্রথমে গ্রামীণ ব্যাংক একটি মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিনা জামানতে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ঋণ প্রদান করা শুরু করে। এই ঋণ সাধারণত কোন ধরনের জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়া হয় এবং গ্রাহকদের সমবায় ভিত্তিতে ঋণ পাওয়ার সুযোগ প্রদান করে। তবে বর্তমান সময়ে অনেক ব্যাংক ও মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করছে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বিনা জামানতে ঋণ দেয়ার জন্য আরও যে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা সাধারণত ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে। নিচে কয়েকটি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হল-
- গ্রামীণ ব্যাংক: গ্রামীণ ব্যাংক প্রধানত দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে এবং এতে কোন ধরনের জামানত লাগে না।
- ব্র্যাক ব্যাংক: ব্র্যাক ব্যাংক বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার জন্য বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করে।
- বিকাশ: বিকাশ মূলত ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থেকে যার কোন ধরনের জামানত লাগে না। কিন্তু বিকাশ থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য বিকাশে নিয়মিত টাকা লেনদেন করতে হবে।
- জনতা ব্যাংক: জনতা ব্যাংক বিভিন্ন গ্রাহক ঋণের ক্ষেত্রে বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করে থাকে।
- এসআইবিএল (সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড): এই ব্যাংকও বিনা জামানতে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে।
বিনা জামানতে নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া উচিত। কারণ প্রতিটি ঋণের শর্তাবলী ভিন্ন হতে পারে এবং বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন হতে পারে।
বিনা জামানতে ঋণ দেয়া ব্যাংকের তালিকা
আমাদের দেশে মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান গুলো ছাড়াও বেশ কিছু ব্যাংক রয়েছে যারা জামানত ছাড়াই ঋণ প্রদান করে থাকে। নিচে এসব ব্যাংক গুলোর তালিকা উল্লেখ করা হলো-
আরো পড়ুনঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন
- গ্রামীণ ব্যাংক
- ব্রাক এনজিও
- আশা এনজিও
- বাংলাদেশ ব্যুরো
- উদ্দীপন
- আমার বাড়ি আমার খামার
- ব্র্যাক ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
- সিটি ব্যাংক
- জনতা ব্যাংক
- কর্মসংস্থান ব্যাংয়া
বিনা জামানতে ঋণ নিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
বিভিন্ন মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান গুলো বা এনজিও গুলো থেকে বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার জন্য বেশ কিছু তথ্যের প্রয়োজন হয়। যদিও এ ধরনের লোন এর জন্য কোন ধরনের জামানত নেয়া হয় না, তবে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করার মাধ্যমে ঋণ নেয়া হয়।
মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে জামানত ছাড়া ঋণ নিতে যে সব ডকুমেন্ট লাগে —
আরো পড়ুনঃ ব্র্যাক ব্যাংক পার্সোনাল লোন
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- সদ্য তোলা ০২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- স্বামী/স্ত্রী অথবা পিতা/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- স্বামী/স্ত্রী অথবা পিতা/মাতার সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ০২ কপি ছবি।
- প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত ঋণ আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়।
- স্বামী/স্ত্রী অথবা পিতা/মাতার স্বাক্ষর দিতে হবে।
- অল্প পরিমাণে কিছু টাকা সঞ্চয় হিসাবে জমা করতে হবে।
- প্রতি সপ্তাহে কিছু টাকা সঞ্চয় হিসাবে জমা করতে হবে।
বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার সহজ উপায়
বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার সহজ উপায় হলো মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান। এ সব মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প পরিমাণে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে ঋণ প্রদান করা হয়। ঋণের বিপরীতে জামানত নেয়া হয় না জন্য গ্রাম থেকে শুরু করে শহরে সকলেই তাদের প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ করতে পারছে।
আরো পড়ুনঃ ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি
আমাদের দেশে বেশ কিছু মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ গুলোর মাঝে, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্রাক এনজিও, আশা এনজিও, বাংলাদেশ ব্যুরো, উদ্দীপন অন্যতম। যারা জামানত ছাড়াই লোন নিতে চাচ্ছেন, তারা এসব ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। লোন নেয়ার জন্য এসব মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে হয়। তারপর, তাদের দেয়া ফরম পূরণ করে সাথে ছবি এবং বেশ কিছু তথ্য দিয়ে জামানত বিহীন ঋণ নেয়া যায়।
গ্রামীণ ব্যাংক বিনা জামানতে ঋণ
দেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ব্যবসা করার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক সকল মানুষকে ঋণ প্রদান করে থাকে । গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ দান পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হয়। এ সকল শর্তাবলী পূরণ করে ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে।
- ঋণগ্রহীতার যোগ্যতা: ঋণগ্রহীতা সাধারণত দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ হতে হবে, যারা প্রচলিত ব্যাংকিং সেবার আওতায় ঋণ নিতে পারে না। আর ঋণগ্রহীতার বয়স সাধারণত ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হয়।
- ঋণের পরিমাণ: ঋণের পরিমাণ ঋণগ্রহীতার প্রয়োজন এবং সঞ্চয়ের উপর নির্ভর করে। শুরুতে সাধারণত ঋণের পরিমাণ কম হয়, কিন্তু সফলভাবে ঋণ পরিশোধের পর উচ্চ পরিমাণ ঋণ পাওয়া যায়।
- সঞ্চয় বাধ্যবাধকতা: ঋণগ্রহীতাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সঞ্চয় রাখতে হয় যা ভবিষ্যতে ঋণের কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
- কিস্তি ও পরিশোধের সময়সীমা: ঋণ সাধারণত সাপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। পরিশোধের সময়সীমা ঋণের পরিমাণ ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। এটি সাধারণত ৬ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে হয়।
- জামানত: গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের ক্ষেত্রে কোন জামানত (কল্যাটারাল) দিতে হয় না। তবে ঋণগ্রহীতা গ্রুপভুক্ত হয়, যেখানে প্রত্যেক সদস্য পরস্পরকে ঋণ পরিশোধে সহায়তা করে।
- মুনাফা (সুদ): সাধারণত সুদের হার অন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের তুলনায় কম। সুদের হার ঋণের প্রকারভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে এটি ১৩% এর মধ্যে থাকে।
- সফল ঋণ পরিশোধের সুযোগ: ঋণ সঠিক ভাবে পরিশোধ করলে ঋণগ্রহীতা ভবিষ্যতে আরও বড় ঋণ পেতে পারেন।
উপরের এ সাধারণ শর্তাবলী অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ প্রদান করে থাকে। তবে গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা ও অঞ্চলে এই শর্তাবলীতে সামান্য পরিবর্তন থাকতে পারে।
বিনা জামানতে কত টাকা ঋণ দেয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক থেকে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। তবে বেসরকারি ব্যাংক গুলো থেকে প্রথম বার জামানত বিহীন সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সমূহ
তবে প্রথম অবস্থায় মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান বিনা জামানতে ২৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ পাওয়া সহজ হয়। কেননা বেশি টাকা ঋণ নিতে হলে অনেক কাগজপত্র ও অন্যান্য যোগ্যতার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
বিনা জামানতে ঋণ নেওয়ার সুবিধা
বিনা জামানতে ঋণ নেওয়ার সুবিধা হলো ঋণগ্রহীতা কোন সম্পত্তি বা জামানত জমা না দিয়েই ঋণ নিতে পারেন। এই সুবিধাটি অনেক প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর হতে পারে বিশেষ করে যখন তাত্ক্ষণিক ভাবে অর্থের প্রয়োজন হয়। নিচে এর প্রধান সুবিধা গুলো উল্লেখ করা হলো-
আরো পড়ুনঃ অনলাইন মোবাইল লোন বাংলাদেশ
- জামানত প্রয়োজন হয় না: এই ঋণ গ্রহণ করার জন্য কোনো সম্পত্তি (যেমন: জমি, বাড়ি, সোনা, গাড়ি) বা কোনো অন্য সম্পদকে জামানত হিসেবে রাখতে হয় না। তাই যাদের কাছে জামানত হিসেবে দেওয়ার মতো সম্পদ নেই, তারাও সহজেই এই ঋণ নিতে পারেন।
- সহজ ও দ্রুত প্রক্রিয়া: বিনা জামানতে ঋণের জন্য ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো সাধারণত কম কাগজপত্র চায় এবং প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। যেহেতু জামানত সংক্রান্ত মূল্যায়ন বা যাচাইয়ের প্রয়োজন হয় না, তাই ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ দ্রুত হয়ে থাকে।
- ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তা: ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য উপযোগী যারা হয়তো বড় সম্পদ জামানত হিসেবে দিতে পারেন না।
- বিভিন্ন খাতে ব্যবহার: এই ঋণ কোনো নির্দিষ্ট খাতে ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যক্তিগত প্রয়োজন যেমন চিকিৎসা, শিক্ষা, বিবাহ বা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে অর্থ ব্যবহার করা যায়।
- কিস্তিতে পরিশোধ: অনেক ক্ষেত্রেই ঋণ পরিশোধের শর্ত গুলো নমনীয় হয়, যা ঋণগ্রহীতাকে কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ দেয়।
বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক-শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আপনারা ইতিমধ্যে বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক সে সম্পর্কে এবং মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান থেকে লোন পাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনেছেন। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে বিনা জামানতে ঋণ পাওয়ার উপায় কি আর কি ধরনের লোন প্রদান করে এবং কত টাকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি।
পাঠক আপনাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য। পরবর্তীতে আরো ব্যাংকের লোন সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাচ্ছেন কিন্তু জামানত নেই? তাহলে বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক জানতে আমাদের আজকের আরটিকেলটি পড়ুন। কারণ আমাদের আরটিকেল এর মাধ্যমে জানতে পারবেন কোন প্রকার জামানত ছাড়াই আপনার প্রয়োজনে কি ভাবে ঋণ নিতে পারবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া জাক, বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
বাংলাদেশ সরকার বেকার ও অর্ধ বেকার যুবকের জন্য বিনা জামানতে ঋণ দেয়ার কর্মসূচি চালু করেছে। দেশের যে কোন নাগরিক জামানত বিহীন ঋণ নিতে পারবে। আমাদের দেশে বেশ কিছু ব্যাংক আছে যেখানে কোন প্রকার জামানত ছাড়াই ঋণ নেয়া যায়। যাদের টাকার প্রয়োজন কিন্তু ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া ঋণ দিচ্ছেনা, তাদের জন্য এই ব্যাংক গুলো হতে পারে লাইফ সেভার।
আরো পড়ুনঃ সহজ কিস্তিতে লোন বাংলাদেশ
বাংলাদেশে বেশ কিছু ব্যাংকে জামানত ছাড়াই ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা আছে। এসব ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই পোস্টে। তো চলুন জেনে নেওয়া জাক, বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক
বাংলাদেশে সর্বপ্রথমে গ্রামীণ ব্যাংক একটি মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিনা জামানতে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ঋণ প্রদান করা শুরু করে। এই ঋণ সাধারণত কোন ধরনের জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়া হয় এবং গ্রাহকদের সমবায় ভিত্তিতে ঋণ পাওয়ার সুযোগ প্রদান করে। তবে বর্তমান সময়ে অনেক ব্যাংক ও মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করছে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বিনা জামানতে ঋণ দেয়ার জন্য আরও যে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা সাধারণত ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে। নিচে কয়েকটি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হল-
- গ্রামীণ ব্যাংক: গ্রামীণ ব্যাংক প্রধানত দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে এবং এতে কোন ধরনের জামানত লাগে না।
- ব্র্যাক ব্যাংক: ব্র্যাক ব্যাংক বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার জন্য বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করে।
- বিকাশ: বিকাশ মূলত ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থেকে যার কোন ধরনের জামানত লাগে না। কিন্তু বিকাশ থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য বিকাশে নিয়মিত টাকা লেনদেন করতে হবে।
- জনতা ব্যাংক: জনতা ব্যাংক বিভিন্ন গ্রাহক ঋণের ক্ষেত্রে বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করে থাকে।
- এসআইবিএল (সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড): এই ব্যাংকও বিনা জামানতে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে।
বিনা জামানতে নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া উচিত। কারণ প্রতিটি ঋণের শর্তাবলী ভিন্ন হতে পারে এবং বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন হতে পারে।
বিনা জামানতে ঋণ দেয়া ব্যাংকের তালিকা
আমাদের দেশে মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান গুলো ছাড়াও বেশ কিছু ব্যাংক রয়েছে যারা জামানত ছাড়াই ঋণ প্রদান করে থাকে। নিচে এসব ব্যাংক গুলোর তালিকা উল্লেখ করা হলো-
আরো পড়ুনঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন
- গ্রামীণ ব্যাংক
- ব্রাক এনজিও
- আশা এনজিও
- বাংলাদেশ ব্যুরো
- উদ্দীপন
- আমার বাড়ি আমার খামার
- ব্র্যাক ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
- সিটি ব্যাংক
- জনতা ব্যাংক
- কর্মসংস্থান ব্যাংয়া
বিনা জামানতে ঋণ নিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
বিভিন্ন মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান গুলো বা এনজিও গুলো থেকে বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার জন্য বেশ কিছু তথ্যের প্রয়োজন হয়। যদিও এ ধরনের লোন এর জন্য কোন ধরনের জামানত নেয়া হয় না, তবে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করার মাধ্যমে ঋণ নেয়া হয়।
মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে জামানত ছাড়া ঋণ নিতে যে সব ডকুমেন্ট লাগে —
আরো পড়ুনঃ ব্র্যাক ব্যাংক পার্সোনাল লোন
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- সদ্য তোলা ০২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- স্বামী/স্ত্রী অথবা পিতা/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- স্বামী/স্ত্রী অথবা পিতা/মাতার সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ০২ কপি ছবি।
- প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত ঋণ আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়।
- স্বামী/স্ত্রী অথবা পিতা/মাতার স্বাক্ষর দিতে হবে।
- অল্প পরিমাণে কিছু টাকা সঞ্চয় হিসাবে জমা করতে হবে।
- প্রতি সপ্তাহে কিছু টাকা সঞ্চয় হিসাবে জমা করতে হবে।
বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার সহজ উপায়
বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার সহজ উপায় হলো মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান। এ সব মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প পরিমাণে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে ঋণ প্রদান করা হয়। ঋণের বিপরীতে জামানত নেয়া হয় না জন্য গ্রাম থেকে শুরু করে শহরে সকলেই তাদের প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ করতে পারছে।
আরো পড়ুনঃ ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি
আমাদের দেশে বেশ কিছু মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ গুলোর মাঝে, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্রাক এনজিও, আশা এনজিও, বাংলাদেশ ব্যুরো, উদ্দীপন অন্যতম। যারা জামানত ছাড়াই লোন নিতে চাচ্ছেন, তারা এসব ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। লোন নেয়ার জন্য এসব মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে হয়। তারপর, তাদের দেয়া ফরম পূরণ করে সাথে ছবি এবং বেশ কিছু তথ্য দিয়ে জামানত বিহীন ঋণ নেয়া যায়।
গ্রামীণ ব্যাংক বিনা জামানতে ঋণ
দেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ব্যবসা করার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক সকল মানুষকে ঋণ প্রদান করে থাকে । গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ দান পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হয়। এ সকল শর্তাবলী পূরণ করে ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে।
- ঋণগ্রহীতার যোগ্যতা: ঋণগ্রহীতা সাধারণত দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ হতে হবে, যারা প্রচলিত ব্যাংকিং সেবার আওতায় ঋণ নিতে পারে না। আর ঋণগ্রহীতার বয়স সাধারণত ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হয়।
- ঋণের পরিমাণ: ঋণের পরিমাণ ঋণগ্রহীতার প্রয়োজন এবং সঞ্চয়ের উপর নির্ভর করে। শুরুতে সাধারণত ঋণের পরিমাণ কম হয়, কিন্তু সফলভাবে ঋণ পরিশোধের পর উচ্চ পরিমাণ ঋণ পাওয়া যায়।
- সঞ্চয় বাধ্যবাধকতা: ঋণগ্রহীতাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সঞ্চয় রাখতে হয় যা ভবিষ্যতে ঋণের কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
- কিস্তি ও পরিশোধের সময়সীমা: ঋণ সাধারণত সাপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। পরিশোধের সময়সীমা ঋণের পরিমাণ ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। এটি সাধারণত ৬ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে হয়।
- জামানত: গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের ক্ষেত্রে কোন জামানত (কল্যাটারাল) দিতে হয় না। তবে ঋণগ্রহীতা গ্রুপভুক্ত হয়, যেখানে প্রত্যেক সদস্য পরস্পরকে ঋণ পরিশোধে সহায়তা করে।
- মুনাফা (সুদ): সাধারণত সুদের হার অন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের তুলনায় কম। সুদের হার ঋণের প্রকারভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে এটি ১৩% এর মধ্যে থাকে।
- সফল ঋণ পরিশোধের সুযোগ: ঋণ সঠিক ভাবে পরিশোধ করলে ঋণগ্রহীতা ভবিষ্যতে আরও বড় ঋণ পেতে পারেন।
উপরের এ সাধারণ শর্তাবলী অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ প্রদান করে থাকে। তবে গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা ও অঞ্চলে এই শর্তাবলীতে সামান্য পরিবর্তন থাকতে পারে।
বিনা জামানতে কত টাকা ঋণ দেয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক থেকে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। তবে বেসরকারি ব্যাংক গুলো থেকে প্রথম বার জামানত বিহীন সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সমূহ
তবে প্রথম অবস্থায় মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান বিনা জামানতে ২৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ পাওয়া সহজ হয়। কেননা বেশি টাকা ঋণ নিতে হলে অনেক কাগজপত্র ও অন্যান্য যোগ্যতার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
বিনা জামানতে ঋণ নেওয়ার সুবিধা
বিনা জামানতে ঋণ নেওয়ার সুবিধা হলো ঋণগ্রহীতা কোন সম্পত্তি বা জামানত জমা না দিয়েই ঋণ নিতে পারেন। এই সুবিধাটি অনেক প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর হতে পারে বিশেষ করে যখন তাত্ক্ষণিক ভাবে অর্থের প্রয়োজন হয়। নিচে এর প্রধান সুবিধা গুলো উল্লেখ করা হলো-
আরো পড়ুনঃ অনলাইন মোবাইল লোন বাংলাদেশ
- জামানত প্রয়োজন হয় না: এই ঋণ গ্রহণ করার জন্য কোনো সম্পত্তি (যেমন: জমি, বাড়ি, সোনা, গাড়ি) বা কোনো অন্য সম্পদকে জামানত হিসেবে রাখতে হয় না। তাই যাদের কাছে জামানত হিসেবে দেওয়ার মতো সম্পদ নেই, তারাও সহজেই এই ঋণ নিতে পারেন।
- সহজ ও দ্রুত প্রক্রিয়া: বিনা জামানতে ঋণের জন্য ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো সাধারণত কম কাগজপত্র চায় এবং প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। যেহেতু জামানত সংক্রান্ত মূল্যায়ন বা যাচাইয়ের প্রয়োজন হয় না, তাই ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ দ্রুত হয়ে থাকে।
- ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তা: ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য উপযোগী যারা হয়তো বড় সম্পদ জামানত হিসেবে দিতে পারেন না।
- বিভিন্ন খাতে ব্যবহার: এই ঋণ কোনো নির্দিষ্ট খাতে ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যক্তিগত প্রয়োজন যেমন চিকিৎসা, শিক্ষা, বিবাহ বা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে অর্থ ব্যবহার করা যায়।
- কিস্তিতে পরিশোধ: অনেক ক্ষেত্রেই ঋণ পরিশোধের শর্ত গুলো নমনীয় হয়, যা ঋণগ্রহীতাকে কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ দেয়।
বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক-শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আপনারা ইতিমধ্যে বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক সে সম্পর্কে এবং মাইক্রোফাইনান্স প্রতিষ্ঠান থেকে লোন পাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনেছেন। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে বিনা জামানতে ঋণ পাওয়ার উপায় কি আর কি ধরনের লোন প্রদান করে এবং কত টাকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি।
পাঠক আপনাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য। পরবর্তীতে আরো ব্যাংকের লোন সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url